,

লোকাল পণ্য নিয়ে কাজ করে স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা কাকলী

অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী হিসেবে পেয়েছেন ‘জয়িতা’ সম্মাননা

জাবেদ তালুকদার : বর্তমানের বিশ্ববাজার এখন সামগ্রিকভাবে হয়ে উঠেছে অনলাইননির্ভর। গত কয়েক বছর থেকেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক নারীই নিজেদের ব্যবসা শুরু করেছেন, শক্ত হাতে নিজের পরিবারের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন। তাদের মধ্যেই একজন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার কাকলী আক্তার। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, শ্রম, মেধা, ধৈর্য্য আর প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে আজ প্রতিষ্ঠিত একজন নারী উদ্যোক্তা তিনি। তার নারী উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প এখন নারী সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার এক জলন্ত দৃস্টান্ত। ঘরকন্না সামলে নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। কীভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে নারী সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার এক জলন্ত দৃস্টান্ত হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করা কাকলী, কেমনই বা ছিল তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্পটা? সেটাই আজ দৈনিক হবিগঞ্জ সময়ের পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন তরুণ সংবাদকর্মী জাবেদ তালুকদার।
কাকলী আক্তার জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগে ১ম শ্রেণীতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। পড়াশোনা শেষ হতেই বিয়ে সংসার সন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবার সময় হয়ে উঠেনি আর। একটা সময় নিজের কাছের মানুষদের থেকেই শুনতে হতো নানা কটু কথা। এতে করে হতাশায় ডুবে পড়েন তিনি। এতো পড়াশোনা করলেও দিনশেষে নিজের একটা পরিচয়ের অভাববোধ করতেন তিনি। কিন্তু বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে চাকরি করার সাহস পেতেন না। তবে কিছু একটা করার প্রবল ইচ্ছা ছিল তার। সেই ইচ্ছাশক্তিতে ভর করেই প্রযুক্তির ব্যবহারে ম্বল্প পূজি নিয়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে এলাকার লোকাল পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন। নানা বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। তবু দমে যাননি তিনি। নিজের লক্ষের দিকেই ছুটে চলেছেন। অবশেষে দেখা পেয়েছেন সাফল্যেরও। তার অধীনে কাজ করেন আরও দশজন নারী। নারী সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার এক জলন্ত দৃস্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করেছেন নিজেকে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে হবিগঞ্জ জেলা ও মাধবপুর উপজেলা পর্যায়ে পেয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে ‘জয়িতা’ সম্মাননা।
তিনি জানান, ২০২০ সালের জুলাই মাসে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তখন খুব একটা কাটতি না থাকলেও মানসম্মত পণ্য সরবরাহের কারনে এখন তার ব্যস্ততার শেষ নেই। লন্ডন, আমেরিকা, সৌদি আরব, গ্রীস আর দুবাইয়ে ডিএইচএল এর মাধ্যমে পার্সেল করে পণ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিতই সুন্দরবন কুরিয়ারে বুকিং দিতে হয় এসকল পণ্যের। পরিচিত অনেকেই তার কাছে ব্যবসা শুরুর বিষয়ে পরামর্শ নিতে আসেন।
তার দুটি প্রতিষ্ঠান টং এবং সোয়ারিতে সকল ধরনের চা, মনিপুরী পণ্য, লোকাল চাল, ঢেঁকি ছাঁটা আতব চালের গুঁড়ি, পাহাড়ি তেঁতুল, সিজনাল আম, খেজুরের গুঁড়, প্রাকৃতিক চাকের মধুসহ নানা পণ্য নিয়ে কাজ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর